দৈনিক নবীগঞ্জের ডাক
আজ ৪ঠা ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধের অকুতোভয় বীর সেনানী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ধ্রুব’র ৫০ তম শাহাদাত বরন দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নবীগঞ্জ শহর মুক্ত করতে পাক হানাদারদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন এই বীর সেনা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও এই বীর শহীদের স্মৃতি রক্ষার্থে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি কিংবা তার শাহাদাত বার্ষিকী পালন করতে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। অযত্ন, অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে এই বীর সেনানীর শেষ স্মৃতি। সেদিন ছিল ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখ। সারাদেশের মত নবীগঞ্জেও পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের চোরাগুপ্তা হামলায় দিশেহারা অবস্থায় ছিলেন সাধারন মানুষ। নবীগঞ্জ থানা প্রাঙ্গনে বাংকার তৈরী করে রাজাকারদের সহায়তায় পাক বাহিনী শক্ত অবস্থান তৈরী করে। বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে ইতিমধ্যে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এমনি অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের অসম সাহসী বীর সৈনিক রশীদ ও তার বাহিনী নবীগঞ্জ প্রাঙ্গনে অবস্থিত পাক হানাদারদের ক্যাম্পে হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। ঐদিন কাকডাকা ভোরে মুক্তিযোদ্ধা কনা মিয়ার বাড়ীর পুকুর পাড়ে রশিদ বাহিনী নবীগঞ্জ থানায় অবস্থান করা পাক হানাদারদের ক্যাম্প টার্গেট করে অবস্থান নেয়। এই দলের সর্ব কনিষ্ট সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ধ্রুব অত্যান্ত সাহসিকতার সহিত পাক হানাদারদের ব্যাংকার ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হাতে ক্রলিং করে নবীগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের উপর দিয়ে অগ্রসর হতে থাকে। তার সহযোদ্ধাগণ শক্রসৈন্যকে লক্ষ্য করে মেশিন গানের গুলি ছুড়তে থাকে। শক্র পাক সেনারাও আক্রমন প্রতিহত করতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ঘন্টব্যাপী গুলি বিনময় হয়। সূর্যের আলো দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিবাহিনী আত্মরার্থে পিছু হটতে থাকে। কিন্তু অসম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ধ্রুব আর পিছু হটা হলো না। শত্রুর ছুড়া গুলিতে তার বুকের পাজর ঝাঝড়া হয়ে যায়। সাথে সাথেই শাহাদাৎ বরণ করেন এই অসম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ধ্রুব। দীর্ঘক্ষণ তার লাশ পরে থাকে নবীগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের রাস্তার উপর। এক সময় পাশ্ববর্তী রাজনগর গ্রামের কিছু সাহসী যুবক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ধ্রুবের লাশ এনে সমাধিস্থ করে নবীগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের ঐ গ্রামের কবরের এক পাশে। পরদিন ৫ই ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা, তৎকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডার মাহবুবুর রব সাদীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা নবীগঞ্জ থানা প্রাঙ্গনে অবস্থিত পাক হানাদারদের ক্যাম্পে আক্রমন চালিয়ে দখল করে মুক্ত করেন নবীগঞ্জ শহরকে। কিন্তু দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ধ্রুবর সমাধিটি আজও সঠিকভাবে চিহ্নিত করা হয় নাই। ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস, ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ফুল দিয়ে সম্মান জানানো হয় মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীদের। কিন্তু ঠিকানা বিহীন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ধ্রুবের সমাধি আজও অচিহ্নিত অবস্থায় নবীগঞ্জ থানা সংলগ্ন নবীগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের পাশে রাজনগর গ্রামের কবর স্থানের এক পাশে পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়। একজন টগবগে যুবক যার তখনও মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার বয়স হয়নি কিন্তু দেশ মার্তৃকার টানে ধ্রুব অপরিণত বয়সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৫০ বছরেও তার সহযোদ্ধারা অনেক অনুসন্ধান করে তাঁর জন্মস্থানও পিতামাতার সন্ধান পান নাই। খোঁজ নিয়ে অনেকের কাছ থেকে জানা যায় শ্রীমঙ্গলের কোন এক চা-বাগানের দরিদ্র শ্রমিক পিতা মাতার সন্তান ছিল শহীদ ধ্রুব। এক দিকে ঠিকানা বিহীন, অন্যদিকে সমাধি অচিহ্নিত, অবহেলিত এই কি ছিল শহীদ ধ্রুবের স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের পরে অনুসারী নবীগঞ্জের সচেতন নাগরিক সমাজ এই অবহেলিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধি চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে একটি সুত্রে জানা গেছে। বর্তমানে মুক্তিযদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় আসীন রয়েছেন। তাই অচিরেই শহীদ ধ্রুবের সমাধিস্থল সনাক্ত করে সরকারীভাবে সেখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মান করে প্রতি বছর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালনের জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানিয়েছেন নবীগঞ্জের সচেতনমহল।
May 17, 2022 43 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 29, 2022 97 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 22, 2022 153 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 21, 2022 116 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 19, 2022 142 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 15, 2022 215 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 01, 2022 215 নবীগঞ্জের সংবাদ
Mar 20, 2022 267 নবীগঞ্জের সংবাদ
Mar 20, 2022 185 নবীগঞ্জের সংবাদ
Mar 17, 2022 209 নবীগঞ্জের সংবাদ
Mar 16, 2022 184 নবীগঞ্জের সংবাদ
Mar 15, 2022 178 নবীগঞ্জের সংবাদ
Aug 24, 2019 1675 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 14, 2020 1281 নবীগঞ্জের সংবাদ
Apr 20, 2020 973 নবীগঞ্জের সংবাদ
May 06, 2020 1067 নবীগঞ্জের সংবাদ
Sep 25, 2019 1164 সংবাদ
Apr 25, 2020 1105 মতামত
Apr 27, 2020 1069 নবীগঞ্জের সংবাদ
Sep 25, 2019 1278 নবীগঞ্জের সংবাদ
Oct 23, 2019 1097 নবীগঞ্জের সংবাদ