আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই হবে : ওবায়দুল কাদের। আওয়ামীলীগ চায় আগামী সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে করতে
আর বিরুধী দল চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা জাতিসংগের অধীনে ।
প্রশ্ন জাগতে পারে, আওয়ামীলীগ অন্য কারো অধীনে নয় শুধু শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন করতে আগ্রহী কেনো?
তার অধীনে নির্বাচন করলে তাদের জন্য কি আলাদা কোন মিরাকলে বয়ে নিয়ে আসতে পারে ?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদেরকে ২০১৮ সালের নির্বাচন এবং এর পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনের ডাটা ভালো ভাবে অবলোকন করতে হবে।
২০১৮সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এপর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছে , তাতে ২০%,২৫%,৩০% পার্সেন্টের মত ভোট কাস্ট হয়েছে !
কিছু দিন আগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্টিত হয় . নির্বাচনটি আমাদের দেখা ইদানিং কালের সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন . সেই নির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র ৪৮.২% আর
খোলনা এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট পড়েছে যথাক্রমে ৪২% আর ৫০% !
বিএনপির মোশাররফ হুসেইনের এক প্রশ্নের জবাবে টকশোর হোস্ট , নাজনীন মুন্নির বলেন " কোথাও কোন নির্বাচনে শত ভাগ ভোট কাস্ট হয়না"
নাজনীন মুন্নির কথা সত্য , কোথাও কোন নির্বাচনে শত ভাগ ভোট কাস্ট হয়না আর বাংলাদেশের যেহেতু ১ কোটি ২৫ লাখ(১০ কোটি ভোটারের ১২.৫%) লোক বিদেশে থাকে আর তাদের এবসেনটি ব্যালটে ভোট দানের কোন ব্যবস্তা নাই তাই এখানে শত ভাগ ভোট কাস্ট হওয়াটা পুরুপুরি অসম্ভব!
আর এই অসভবকে সম্ভব করে তুলেছেন শেখ হাসিনা .
১) তার অধীনে অনুষ্টিত হওয়া নির্বাচনের ২১৩ টি সেন্টারে শত ভাগ ভোট কাষ্ট হয়েছে !
২) ১০৫২ টি সেন্টারে অপজিশন বিএনপি জোটের প্রার্থীরা শূন্য ভোট পেয়েছেন . শুধু কি তাই -
৩) এসব সেন্টারে এক একজন প্রাথী একাই শত ভাগ ভোট পেয়ে গেছেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭৭ টি সেন্টারে ১০০% ভোট পেয়েছেন !
নির্বাচনে সর্বচ্চো কতভাগ ভোট কাস্ট হতে পারে, এবং কে ভাগে কত পার্সেন্ট ভোট পেতে পারেন, তা বুঝতে হলে নির্বাচনের রাতে অনুষ্টিত হওয়া নবনীতা চৌধুরীর রাজকাহন অনুষ্টানটি দেখা দরকার !
বিএনপির ভোট কত পার্সেন্ট আর কতটি ভোট এবসেনটি ভোট
নবনীতা চৌধুরী , আবু আলম মোঃ শহীদ খান, মোঃ শাহনেওয়াজ : বাংলাদেশে সবোর্চ্চ বৈধ ভোট ৮০% ।
নির্বাচনের দিন রাতে ভোট গণনা চলাকালে DBC চ্যানেলে নবনীতা চৌধুরী উপস্থিত হোন দুজন অথিতি নিয়ে ,তাদের একজন সাবেক সচিব আবু আলম মোঃ শহীদ খান আর আরেকজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোঃ শাহনেওয়াজ। তারা হিসাব নিকাশ করে দেখান যে নির্বাচনে এবসেন্টি ব্যালটে ভোটদানের সিস্টেম না থাকার কারনে ২০% ভোটার নির্বাচনে কোন দিন ভোট দিতে পারবেনা, ।
যার মধ্যে ১ কোটি ২৫ লক্ষ প্রবাসী ভোটার : সারা দেশের রেজিস্টার ভোটারের (১০%) আরো অন্য ১০% ভোটার যার মধ্যে আছেন ১৫ লক্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী , মৃত , অসুস্ত , জেলে থাকা আর নির্বাচনের দিন এলাকার বাইরে অবস্থান করা ব্যক্তি। বিএনপির ভোট ৩০%-৩৫% থেকে কমলেও এখনও সেটি ২৫% এর নিচে যায়নি।
চলুন এখন আমরা নবনীতা চৌধুরী , সাবেক সচিব আবু আলম মোঃ শহীদ খান আর সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোঃ শাহনেওয়াজের কথার সূত্র ধরে শতভাগ ভোটকাস্ট হওয়া সেন্টারগুলোর মধ্যে একটি সেন্টারের হিসাব মিলাই .
স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে কুমিল্লা ১০ আসনের ৩৬ নং কেন্দ্রের রিজাল্ট , সেই কেন্দ্রে ১০০% ভোট কাস্ট হয়,আর বিএনপির প্রার্থী মোঃ মনিরুল হক চৌধুরী পেয়েছেন শূন্য ভোট!
শূন্য ভোট পাওয়া দেখে প্রশ্ন আসতে পারে, বিএনপির প্রার্থী মোঃ মনিরুল হক চৌধুরী কি কোন অপরিচিত অখ্যাত ব্যক্তি?
উত্তর হলো না, তিনি কোন অপরিচিত অখ্যাত ব্যক্তি নন , তিনি অত্যন্ত সুপরিচিত , প্রাক্তন সংসদ সদস্য , একজন বীর মুক্তিযুদ্ধা এবং সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা।
তার পরও তিনি কি কারনে ৩৬ নং সেন্টারে একটিও ভোট পাননি ? তার শূন্য ভোট পাওয়া নিয়ে এম আরাফাত হুসেন কি বলেন একটু শুনি :
আরাফাতের ভাষায় বিএনপির কর্মী সমর্থক ভোট দিতে আসেনি ???আর নবনীতা চৌধুরী , আবু আলম মোঃ শহীদ খান, মোঃ শাহনেওয়াজের মতে এখনও বিএনপির ২৫ % এর মত ভোট আছে !
আমাদের প্রশ্ন ৩৬ নং সেন্টারে বিএনপির ২৫% ভোটার ভোট দিতে না আসার পরও ১০০ % ভোট কাস্ট হলো কি করে ?
তাহলে কারা এই ২৫ % ভোটারের ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দিয়েছি?? (২০% এবসেন্টি + ২৫ %বিএনপি = ৪৫%) এই কেন্দ্রের ৩৩৫১X ৪৫% = ১৫০৮ টি ভোট অবৈধ !
(বিএনপির ভোট বিষয়ে আরাফাতের বক্তব্য হলো :)
এভাবে ২১৩টি সেন্টারে শত ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।
বাংলাদেশে এবসেন্টি ব্যালটে ভোট দানের সিস্টেম না থাকায় ধরে নিতে হবে ২১৩টি সেন্টারর ৮০ % এর উপরে কাস্ট হওয়া সকল ভোটই অবৈধ ! ( ২০%এবসেন্টি ভোটার )
আরো পরিষ্কার করে একটি কথা বলা দরকার , বাংলাদেশে ৮০% ভোট কাস্ট হওয়ার মানে অন্য যেসব দেশে এবসেনটি ব্যালটে ভোটের ব্যবস্তা আছে সে সব দেশে ১০০% ভোট কাস্ট হওয়ার সমান!
যেহেতু অন্যান্য দেশের কোথাও ১০০ % ভোট কাস্ট হয়না তাই বাংলাদেশে ৮০% ভোট কাস্ট হওয়াটাও প্রায় অসম্ভব .
২১৩টি সেন্টারের টোটাল ভোটার সংখ্যা : ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৯৯৩ জন !
এই সংখ্যা আইসল্যান্ড, ব্রুনাই ,মালদ্বীপ , জিব্রাল্টারসহ বিশ্বের অনেক দেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি.
বাংলাদেশে এবসেন্টি ভোটের সিস্টেম না থাকার জন্য শতভাগ ভোট কাস্ট হওয়া ২১৩টি সেন্টারের অবৈধ ভোট:
৫ লাখ ৪৭ হাজার ৯৯৩ এর ২০ % যা ১ লাখ ১০ হাজারটি অবৈধ ভোটা !