১২.৫% প্রবাসীর দেশে নির্বাচনে সেন্টারে সেন্টারে ১০০% ভোট কাস্ট হয়ে যাওয়া নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত করে ব্যালট বাক্সে অবৈধ ভোটের উপস্তিতি ঘটেছে । ২০১৮ সালের নির্বাচনে ২১৩ টি সেন্টারে ১০০ % ভোট কাস্ট হয়েছে ! নির্বাচনে কি পরিমান অবৈধ ব্যালট কাস্ট হয়েছে তার একটি সাধারণ ধারণা পাওয়ার জন্য ১০০ % ভোট কাস্ট হওয়া যে কোন একটি সেন্টারের ভোটের ডাটা বিশ্লেষণ করা দরকার .
১০০ % ভোট কাস্ট হওয়া কুমিল্লা-১০ আসনের ৩৬ নং সেন্টারের ভোটের ডাটা বিশ্লেষণে করে যা দেখতে পাওয়া যায় :
১) বিএনপির প্রার্থী শূন্য ভোট পেয়েছে ?
২) প্রবাসীসহ সকল পোস্টাল ব্যালটের ভোট কাস্ট হয়েছে!
৩ ) আওয়ামীলীগের প্রার্থী পেয়েছে ৯৯.৯৬% ভোট .
২০১৮ সালের নির্বাচনের জরুরী কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো।
নির্বাচনে কোন পোস্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়া হয়নি তাই কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েই সবাইকে ভোট দিতে হয়েছে !
নির্বাচনে রেজিস্টার্ড ভোটার : ১০৪১৫০০০০ জন .
পোস্টাল ব্যালটে ভোট না নেয়ার কারনে যারা ভোট দিতে পারেনি
প্রবাসী ভোটার : ১কোটি ২৫ লক্ষ : ভোটের: ১২.৫%
নির্বাচনি কর্মকর্তা-কর্মচারি : ১৫ লক্ষ
অসুস্ত , মৃত , জেলে থাকা, হাসপাতালে থাকা , ঠিকানা থেকে দূরে থাকা ব্যক্তি সব মিলিয়ে ২০% মানুষের নির্বাচনে উপস্থিত হয়ে ভোট দেওয়ার উপায় ছিলোনা।
বিএনপির প্রার্থীর শূন্য ভোট সম্পর্কে আওয়মীলীগের বক্তব্য :
A) শেখ হাসিনার মতে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করে অপরিচিত প্রার্থী দেওয়ার কারনে তারা কোন ভোট পায়নি !
B) আর, মোহাম্মদ আরাফাত হুসেনের মতে বিএনপি শূন্য ভোট পাওয়ার মত দল নয়, তবে নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা কোন ধরণের প্রচার প্রচারণা চালায়নি বলে তাদের ভোটাররা নির্বাচনে ভোট দিতে আসেনি ?
C) আর সাবেক সচিব আবু আলা মোহাম্মদ শহীদ খান আর সাবেক নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ মনে করেন বিএনপি এখনো ২০ % থেকে ২৫% ভোট হল্ড করে .
A).
দেখা যাক , বিএনপির শূন্য ভোট পাওয়ার পিছনে শেখ হাসিনার দাবির যৌক্তিকতা কতটুকু ?
মোঃ মনিরুল হক চৌধুরীর কি বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যে নমিনেশন পাওয়া একজন অযোগ্য ,অপরিচিত বা ভুইফোড় প্রার্থী?
মোঃ মনিরুল হক চৌধুরীর কোন অযোগ্য ,অপরিচিত বা ভুইফোড় প্রার্থী নন, তার আছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন. তিনি আওয়মীছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন. দুবারের এমপি এবং খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা . অতএব শেখ হাসিনার দাবি অযৌক্তিক।
B)
এখন দেখা যাক , বিএনপির শূন্য ভোট পাওয়ার পিছনে এম.আরাফাত হুসেনের দাবির যৌক্তিকতা কতটুকু ?
মোঃ মনিরুল হক চৌধুরীর নির্বাচনের কয়েকদিন পূর্ব থেকেই কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন, তার পক্ষে নির্বাচনের মাঠে প্রচার প্রচারণা চালানো সম্ভব পর হয়নি। সময়ে অসময়ে পুলিশি ধর পাকড়ের কারনে অন্য নেতা কর্মীদেরও তার পক্ষে প্রচার প্রচারনা চালানো সম্ভবপর হয়নি।
“প্রচার প্রচারণা না থাকার কারনে বিএনপির ভোটাররা নির্বাচনের দিন ভোট দিতে কেন্দ্রে যাননি ” আরাফাত হুসেনের এই দাবির পক্ষে মোটামোটি যৌক্তিকতা খোঁজে পাওয়া যায়।
C)
বিএনপির ২০% ব্যালট গেলো কোথায় ?
আবু আলা মোহাম্মদ শহীদ খান, শাহনেওয়াজ চৌধুরীর কথা মত বিএনপি এখনো ২০%-২৫% ভোট হোল্ড করে তাই নির্বাচনী কর্মকর্তা আর পুলিশ দায়িত্বে ৩৩৫১ এর ২০% মিনিমাম ৬৭০ টি ভোট না দেয়া ব্যালট থাকার কথা।
শুধু কি তাই , ১২.৫% প্রবাসী, নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মচারী -কর্মকর্তা, পুলিশ, অসুস্ত , মৃত , জেলে থাকা, হাসপাতালে থাকা , ঠিকানা থেকে দূরে থাকা ব্যক্তি সব মিলিয়ে ২০% মানুষের নির্বাচনে উপস্থিত হয়ে ভোট দেওয়ার উপায় ছিলোনা বলে ৩৩৫১ এর আরো ২০% ৬৭০ টি - ভোট না দেয়া ব্যালট নির্বাচনী কর্মকর্তা আর পুলিশ দায়িত্বে থাকার কথা।
পোস্টাল ব্যালটে ভোটের ব্যবস্তা না থাকা আর বিএনপির কর্মী সমর্থদের কেন্দ্রে উপস্থিত না হওয়ার কারনে কেন্দ্রের মোট ভোটারের চেয়ে কম করে হলেও ১৩৭০ টি ভোট কম কাস্ট হওয়ার কথা। এই ব্যালট গুলো পুলিশ আর নির্বাচনী কর্মকর্তা কর্মচারীদের অধীনে সেইফরুমে থাকার কথা।
যে ব্যালট গুলো পুলিশ আর নির্বাচনী কর্মকর্তাদের অধীনে সেইফরুমে থাকার কথা, সেই ব্যালটগুলো ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় সিল মেরে ব্যালট বাক্সে রেখে দেওয়া হয়েছে! আমানতের খেয়ানতের জন্য পুলিশ আর নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দোষী স্বাব্যস্ত করার এর চেয়ে বড় আর কোন প্রমানের কি প্রয়োজ আছে?
ব্যাংক ভোল্টের টাকা গায়েব হলে যেমন ব্যাংকের স্টাফদের কোমরে ধরি বেঁধে থানায় চালান দেয়া হয় ঠিক তেমনি সেইফরুমের ব্যাল্টগুলো যাদের কারসাজিতে পুলিশ আর নির্বাচনী কর্মকর্তারা নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দিয়েছে তাদেরও কঠিন শাস্তির মুখাপেক্ষী করা দরকার।
পুলিশ আর নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দ্বারা ব্যালট সংগ্রহ করে কোন সভ্যদেশে কেউ কোন দিন নির্বচিত হতে পারেনি। আমেরিকার ২০২০ নির্বাচনে ভার্জিনিয়া স্টেটে ঠিক এমনি একটি ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প সেদিন। তাই আজ তিনি আদালতে কঠিন শাস্তির মুখাপেক্ষী ।
কিন্তু শেখ হাসিনা ২০১৮ এর নির্বাচনে সেন্টারে সেন্টারে নৌকা মার্কায় অজস্র অবৈধ ভোট কালেকশন করিয়েও আদালতে কোন ধরনের শাস্তির মুখাপেক্ষী হচ্ছেন না কেন?
## এটা কি সভ্য সমাজ আর অসভ্য সমাজের পার্থক্য ?
আমেরিকার নির্বাচনে ভার্জিনিয়া সেক্রেটারি অব স্টেটকে ১১৭৮০টি ভোট খোঁজে দেওয়ার কথা বলায় ডোনাল্ড ট্রাম্প অর্গানাইজড ক্রাইম ( রিকো বা মাফিয়া ) আইনে দোষী হিসাবে বিচারের কাঠগড়ায় যে সময় উঠা নামা করতেছেন ঠিক সেসময় বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা তার সাঙ্গ পাঙ্গ দিয়ে কোটি কোটি অবৈধ ভোট কাস্ট করিয়ে শুধু প্রধান মন্ত্রী হয়েই ক্ষান্ত দেননি , নিজের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্টিত করতেও সংবিধানের দোহাই দিয়ে লাফালাফি করছেন!
আমেরিকার সংবিধান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অপরাধ না করেই শুধু অপরাধ করার ইনটেনশন ছিল এই কারনে মাফিয়া আইনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে আর বাংলাদেশের সংবিধান- শেখ হাসিনাকে অপরাধ করার পরও শাস্তির বদলে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পুরুস্কৃত করেছে এমন কি শেয়ালের হাতে মুরগি বর্গা দেওয়ার মত আবারো তার হাতে বাংলাদেশের নির্বাচন অনুষ্টিত করার গুরু দায়িত্ব তুলে দিতে যাচ্ছে !
বাংলাদেশের সংবিধান আর আমেরিকার সংবিধানের মধ্যে এতো পার্থক্য কেন ? এক সংবিধান অপরাধীকে শাস্তি দেয় আর অপরটি অপরাধীকে পুরুস্কৃত করে? সংবিধানিক আইনের এ পার্থক্যটাকে কি সমাজের সভ্যতা নিরুপনের ব্যারোমিটার : সভ্য সমাজ আর অসভ্য সমাজের পার্থক্য বুঝার উপায় ! সভ্য সমাজে অপরাধী শাস্তি পায় আর অসভ্য সমাজে অপরাধী পুরুস্কৃত হয় .