শুক্রবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ কলেজ ছাত্র তাহসিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার মা সহ পরিবার- পরিজনকে দেখতে যান নবীগঞ্জ- বাহুবল আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম কুমার দাশ, সহকারী ভূমি শাহিন দেলোয়ার, নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুক আলী, সহ আরো অনেকেই। নিহত তাহসিনের মাকে এমপি শান্তনা দিয়ে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন যাহাতে দ্রুত প্রকৃত আসামীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা যায়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নবীগঞ্জ উপজেলার ৬নং কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান ও পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড আনমুনু গ্রামের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় ৩টি ব্যাংক ও মার্কেটসহ অর্ধশতাধিক দোকানপাঠ ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সহ ৮ জন পুলিশ সদস্য এবং সাংবাদিকসহ শতাধিক লোকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪৫ রাউন্ড টিয়ারসেল ও ১৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী বলেন, পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতে মা বাদী হয়ে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের আসামীদের ধরতে আমরা আলাদা একটি টিম গঠন করেছি। আসামীদের গ্রেফতার করতে আমাদের পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজারে সরকারি ভাবে সিলগালা করা কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে ভুল অপারেশন করে শিশুকে খৎনা করতে গিয়ে লিঙ্গ কর্তন করলে প্রচুর রক্ত করণ হয়।পরে রোগী কান্না কাটি করলে তাকে ও তার আত্বীয় স্বজনকে চিকিৎসক ও মালিক পক্ষের মারপিট করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । পরে উত্তেজিত জনতা ঘেরাও করেছে। লাইভে সংবাদ প্রচার করতে গেলে মালিক সুহুল আমিন সাংবাদিকদের হাত পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক ভাবে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে কাউকে পায়নি। এবিষয়ে ভুল অপারেশনের শিকার শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬ টার সময়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজার কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। উক্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১৫ দিন পূর্বে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনুমোদন বিহীন থাকায় সিলগালা করা হয়। জানাযায়, বিকাল ৪ টার সময়ে নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের ফরিদ পুর গ্রামের আব্দুশ শহীদের পুত্র ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র তামিম আহমেদ (১২)কে খৎনা করার জন্য নিয়ে আসলে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সুহুল আমিন ও ডাক্তার জহিরুল ইসলাম চৌধুরী জয় সরকারি সিলগালা করা কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালা খুলে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন। হঠাৎ রোগীর চিৎকার শোনে মা বাবা আত্মীয় স্বজন ভিতরের প্রবেশ করে দেখতে রোগী কেন চিৎকার করছে তার জন্য ডাক্তার ও মালিক রোগী কে চর থাব্বর মারছেন। তারা প্রতিবাদ করলে মালিক সুহুল আমিন ও তার লোকজন রোগীর আত্মীয় স্বজন কে মারপিট করে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বাহির করে দেন। চরম হট্রগোল শুরু হয়,খবর পেয়ে নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ আহমদ আজাদ, সাংবাদিক বুলবুল আহমদ সহ ক্ষতিপয় সাংবাদিক ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি জানতে চান ও লাইভ করতে চাইলে মালিক নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ আহমদ আজাদ কে হাতা পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে উপস্থিত জনতা রোগী কে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। রাতে শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের ডাক্তার ও মালিক কে সহ গং ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এবিষয়ে শিশু তামিমের চাচা হারুন মিয়া বলেন, আমার ভাতিজা কে খৎনার নামে ভুল অপারেশন করে লিঙ্গ কেটে ফেলে, প্রচুর রক্ত করণ হয়েছে,সে কান্না কাটি করলে তামিম কে ডাক্তার ও মালিক মারপিট করেছেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় সিলেটে একটি বেসরকারি হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। এবিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) শাহীন দেলোয়ার বলেন, সিলগালা করা কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কেন খুলা বিষয় টি খতিয়ে দেখা হবে। এটা আমরা ১৫ দিন আগ সিলগালা করা হয়েছিল। এবিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা টিএইচও ডাক্তার আব্দুস ছামাদ বলেন, অনুমোদন বিহীন কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হয়েছে। আজকে কেন কে বা কারা খুলছে আমরা বিষয়টি জানিনা,খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাসুক আলী জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন,ঘটনাটি খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়েছি।
সিউল মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্ট ও ইউনিভার্সিটি অব সিউলের ২০২৪ সনের গ্লোবাল আরবান লিডার প্রোগ্রামে চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়ে কোরীয়া গেছেন হবিগঞ্জ পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাবেদ ইকবাল চৌধুরী। ২০২৪ সনের উক্ত প্রোগ্রামের জন্য প”থিবীর ২৭ টি দেশের পাবলিক অফিসিয়াল তাদের আবেদন দাখিল করেন। দাখিলকৃত আবেদন, প্রি প্রজেক্ট কনসেপ্ট পেপার পর্যালোচনা, জুম এপস এর মাধ্যমে ইন্টারভিউ শেষে মোট ১০ জন পাবলিক অফিসিয়ালকে উক্ত প্রোগ্রামের জন্য চুড়ান্তভাবে মনোনয়ন প্রদান করা হয়। মোট পাচ মাসের এ গ্লোবাল প্রোগ্রামটিতে নির্বাচিত ১০ জন পাবলিক অফিসিয়ালকে সিউলের বেষ্ট আরবান প্রাকটিসগুলো সম্পর্কে ধারনা দেয়া হবে। মূলত: এ প্রোগ্রামে তাত্বিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি ব্যবহারিক ও ফিল্ড ভিজিটকে গুরুত্ব দেয়া হবে। হবিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা যে প্রি কনসেপ্ট পেপার দাখিল করেন তা হলো, ”বাংলাদেশের আরবান প্লাষ্টিক বর্জ্য ব্যব¯’ানা- এ কেস ষ্টাডি অব হবিগঞ্জ পৌরসভা। মূলত: তিনি উক্ত প্রোগ্রামে হবিগঞ্জ পৌরসভার বর্জ্য ব্যব¯’াপনার উপর জ্ঞানভিত্তিক গবেষনা কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। হবিগঞ্জ পৌরসভার তার কনসেপ্ট পেপার সফল হলে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের সবগুলো পৌরসভায় তা’ বাস্তবায়ন করা যাবে মর্মে তিনি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে তিনি ২০০৯ সালে কোরিয়া বিশ^বিদ্যালয় হতে ‘মাষ্টার্স অব পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন অন মিউনিসিপ্যাল এন্ড লোকাল এডমিনিস্ট্রেশন’ ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি মিউনিসিপ্যাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ম্যাব) এর সিলেট অঞ্চলের পৌরসভাগুলোর দুর্যোগ ঝুকি মোকাবেলা ও সিটিওয়াইজ ইনকুসিভ স্যানিটেশন কার্যক্রমের মাষ্টার ট্রেইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকায় গতকাল রবিবার (৩ মার্চ) সকালে ইট ভর্তি ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে ২ জন সিএনজি যাত্রী নিহত, অপর ২ জন আহত এবং ৩টি শিশু বাচ্চা অক্ষত রয়েছে। স্থানীয় জনতা দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রায় ১ ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ এবং নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে এবং নিহতদের মরদেহ সিএনজিসহ থানায় নেয়া হয়েছে। হতাহতদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার চরকাটখাল গ্রামে।সুত্রে জানা যায়, উল্লেখিত গ্রামের সাহেদ আলীর ছেলে আব্দুল হাকিম শিশু বাচ্চাসহ পরিবারের ৭ জন সদস্যদের নিয়ে মৌলভীবাজার বরাক গ্রামের ভাড়াটিয়া বাসা থেকে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে নিজ বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার চরকাটখাল গ্রামে যাওয়ার জন্য একটি সিএনজি মৌলভীবাজার থ (১৩-৩৫২০) যোগে রওনা দেন। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সিএনজিটি আউশকান্দি রহমান কমিউনিটি সেন্টারের নিকটস্থ স্থানে পৌছলে বিপরীত দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি ইট বোঝাই ট্রাক ঢাকা মেট্রো ড (১১-৩৩২৭) এর ধাক্কায় ঘটনাস্থলে মৃত সাহেদ আলীর পুত্র আব্দুল হাকিম (৬০) ও আব্দুল আলীর স্ত্রী মুরচান বিবি (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মহা সড়কে যানচলাচল প্রায় ১ঘন্টা বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন।
হাইওয়ে থানা ও নবীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে লাশ উদ্ধার করে সিএনজি অটোরিক্সাসহ থানায় নিয়ে যান। তবে, ঘাতক ট্রাকটি সিএনজি অটোরিক্সা রিক্সাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। সাথে সাথে স্থানীয় লোকজন ট্রাকের পিছু নিয়ে জালালপুর নামক স্থানে ট্রাকটিকে আটক করা হয়। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত সিএনজি চালকের কোন খবর পাওয়া যায় নি। অপর আহত নিহত আব্দুল হাকিম মিয়ার পুত্র রাসেল মিয়া (১৬) ও মুরচান বিবির ভাই এর ছেলে রাহুল মিয়া (৯)। তবে সিএনজিতে থাকা ৩জন শিশু বাচ্চা অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেন শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিমল দেব।
নবীগঞ্জ উপজেলায় কলেজ ছাত্র সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিন (১৮) হত্যার ঘটনার ৫ দিনের মাথায় ১১ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরও ৪-৫ জনকে। গতকাল রোববার রাতে নিহত সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিনের মা মুড়াউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী- শিক্ষাকা মাহফুজা সুলতানা বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা হলো- নবীগঞ্জ শহরের ওসমানী রোডের হেবলু মিয়ার ছেলে মান্না মিয়া (২০), আলাউর মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া (২১), আনমনু গ্রামের রুমন মিয়ার ছেলে রিহাত মিয়া (২১), রাজাবাদ গ্রামের কুদরত আলীর ছেলে শাফি মিয়া (২০), গন্ধ্যা গ্রামের লেবু মিয়ার ছেলে রিমন মিয়া (২২), নিজ চৌকি গ্রামের হাকিম মিয়ার ছেলে জাকির মিয়া (২০), মাইজগাঁও গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে লাদেন মিয়া (২০), দত্তগ্রামের আব্দুল হাফিজের ছেলে সাজু মিয়া (২৫), গন্ধ্যা গ্রামের মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে সাজ্জাত মিয়া (২৪), মিল্লিক গ্রামের মন্নান মিয়ার ছেলে রাতুল মিয়া (২৩), বানিয়াচং উপজেলার কালাইনজুরা গ্রামের মৃত আরজদ উল্লাহর ছেলে মওদুদ আহমেদ (৪০)। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়- সৈয়দ রাইসুল হক তাহসিন (১৮) নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের এইচ.এস.সি ২য় বর্ষে শিক্ষার্থী। সাক্ষী নিহাল আহমেদ মাহি তাহসিনের খালাতো ভাই ও সহপাঠি। আসামীদের কয়েকজন নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্র। অন্যরা লেখাপড়া করে না। তবে আসামীদের সহপাঠি হিসাবে তারা এক সাথে চলাফেরা করে। আসামী মান্নাসহ অন্যরা তাহসিনকে তাদের সাথে চলাফেরা করার জন্য বলে। কিন্তু আসামীদের চালচলন, কথাবার্তা ও আচরণ উশৃংখল প্রকৃতির দেখে তাহসিন তাদেরকে এড়িয়ে চলে। এজন্য আসামীরা তাহসিনের উপর ক্ষিপ্ত হয়। তাহসিন গত ২৭ ফেব্রুয়ারী সকালে বাসা থেকে বের হয়ে এইচ.এস.সি নির্বাচনী পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কলেজে যায়। নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালীন আসামীদের মধ্যে কয়েকজন তাহসিনের পরীক্ষার খাতা দেখানোর জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তাহসিন তার পরীক্ষা ভাল করার জন্য তাদের কথায় খাতা দেখায়নি। পরীক্ষার পর কলেজের সামনে মাঠে মান্না, জুয়েল, রিহাত ও রাতুল পরীক্ষার হলে খাতা না দেখানোর কারণে তাহসিনকে অপমান করে। এক পর্যায়ে তারা তাহসিনের মুখে ও শরীরে থুথু নিক্ষেপ করে। তাহসিন প্রতিবাদ করলে মান্নাসহ অন্যদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে কলেজের সিনিয়র ছাত্রদের হস্তক্ষেপে তাহসিন কলেজ ত্যাগ করে বাসায় চলে আসে। বিকেলে তাহসিন মাহিকে নিয়ে চা খাওয়ার জন্য নবীগঞ্জ শহরে রাজা কমপ্লেক্স নামক মার্কেটের পিছনে একটি চায়ের দোকানে চা খেতে যায়। চা খাওয়া অবস্থায় আসামী মান্নাসহ অন্যরা তাহসিনকে লক্ষ্য করে গালি-গালাজ করে। পরে তাহসিনকে মারপিট করার জন্য উদ্যেত হয় তারা। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে সরিয়ে দেয়। পরে তাহসিন মাহিকে নিয়ে নবীগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃক আয়োজিত বই মেলা দেখার জন্য পৌরসভা প্রাঙ্গণে যায়। রাত ৯টায় বইমেলা থেকে ফেরার পথিমধ্যে তাহসিন ও মাহি ওসমানী রোডস্থ চৌদ্দ হাজারী মার্কেটের সামনের পৌছামাত্রই মান্নাসহ অন্যসকল আসামীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র, দা, লাঠি, লোহার রড, পাইপ, চাকু ছুরিসহকারে তাহসিন ও মাহির উপর হামলা করে। এ সময় তাহসিনকে সারা শরীরে আঘাত করে পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় তাহসিনকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে মাহিকেও বেধরকভাবে মারধোর করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাহসিন ও মাহিকে উদ্ধার করে প্রথমে নবীগঞ্জ ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাহসিন মারা যায়। পরে বুধবার সন্ধ্যায় নবীগঞ্জ জেকে উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযার নামাজ শেষে তাহসিনের গ্রামের বাড়িতের দাফন সম্পন্ন হয়। এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বলেন- তাহসিনের মা বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে, আমরা মামলা রুজু করে গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখছি, আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
নবীগঞ্জ শহরে সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে এক গৃহবধুকে অপহরনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ সময় স্থানীয় জনতা অপহরণের চেষ্টাকারী দুরুদ মিয়াকে ছোরাসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। নামে এক যুবক। আটককৃত দুরুদ মিয়া উপজেলার ছোট সাকুয়া গ্রামের জিতু মিয়ার ছেলে।স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের ছোট সাকুয়া গ্রামের জিতু মিয়ার ছেলে দুরুদ মিয়া কয়েক বছর আগে বিয়ে করেন নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কানাইপুর গ্রামের আয়াত আলীর মেয়ে জাইরুন বেগমকে। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিভিন্ন কারণে জাইরুন বেগম বছর খানেক পুর্বে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে দুরুদ মিয়াকে তালাক প্রদান করে। এক পর্যায়ে উভয়ের পরিবার ও মুরুব্বীয়ান কাজীর মাধ্যমে তালাক রেজিষ্ট্রার সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে দুরুদ তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী জাইরুন বেগমকে নেয়ার জন্য চেষ্টা চালায়। এতে জাইরুন রাজি না হয়নি। এ নিয়ে একাধিক শালিস করে মুরুব্বীয়ানরা জাইরুনও পরিবারকে হুমকী প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য দুরুদকে বলেণ দেয়া হয়।জাইরুনের পরিবারের অভিযোগ, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জাইরুন বেগমের মেয়ে অসুস্থ মেয়েকে বোন সুহেনা বেগম, খালেদা বেগম ওসমানী রোডে ডাক্তারের নিকট নিয়ে আসে। চিকিৎসা শেষে রিক্সার জন্য তারা অপেক্ষা করছিল। এ সময় একটি দুরুদ মিয়া সহযোগিদের নিয়ে একটি মিশুক থেকে জাইরুনের মেয়েসহ সুহেনা বেগমকে অপহরণ করার চেষ্টা চালায়। এ সময় তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দুরুদ মিয়াকে আটক করে। এ সময় তার নিকট থেকে একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে দুরুদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নবীগঞ্জ সংবাদ। নবীগঞ্জে কলেজ ছাত্র সৈয়দ তাহসিন হত্যাকান্ডের ঘটনা’কে কেন্দ্র করে দু’ গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক লোজ আহত হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি দোকান পাট ভাংচুর, মটর সাইকেলে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরে বাহুবল সার্কেল এসপি আবুল খয়ের, ইউএনও এর নেতৃত্বে দাঙ্গা পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কটোর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষ চলাকালে শহরে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।বিভিন্ন প্রাপ্ত সুত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার রাতে কুর্শি ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদের মালিকাধীন রাজা কমপ্লেক্সের পিছনে ফুড কর্নারে দু’দল কলেজ ছাত্রদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনাটি আনমনু গ্রামের কয়েকজন যুবক সমাধা করে দেন। এই খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদ তার মাকের্টের ভিতরে কেন ঘটনা ঘটলো এনিয়ে আনমনু গ্রামের লোকজনদের উদ্দেশ্য করে গালমন্দ করেন এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কথা বার্তা বলেন। এর প্রতিবাদ করেন আনমনু গ্রামের কতিপয় যুবক। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এদিকে চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদ তার মালিকানা গোল্ড ব্রিকফিল্ট থেকে একাধিক ট্রাক দিয়ে ইট, কাচের বোতলসহ প্রচুর লোকজন নিয়ে আসেন। তারা রাজা কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলায় অবস্থান করে বৃষ্টির মতো ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। জবাবে আনমনু গ্রামের লোকজনও নীচ থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।এ সময় চেয়ারম্যান সৈয়দ খালেদুর রহমানের নিজ গ্রাম এনাতাবাদের লোকজন কাউন্সিলর নানু মিয়ার মোটর সাইকেলে অগ্নি সংযোগসহ ৩টি সাইকেল ভাংচুর করে। কাউন্সিলর নানু মিয়ার দোকানসহ একাধিক দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পাল্টা হামলায় রাজা কমপ্লেক্সের গøাস ভাংচুর করা হয়। প্রকাশ্যে একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গ্রাম থেকে লোকজন এনে শহওে রণক্ষেত্রের ঘটনায় শহর জুড়ে আতংক সৃষ্টি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড কাদাঁনো গ্যাস নিক্ষেপ করেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারেনি। এক পর্যায়ে বাহুবলের সার্কেল এসপির নেতৃত্বে হবিগঞ্জ থেরেক একদল দাঙ্গা পুলিশ আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যানসহ এনাতাবাদের লোকজনদেও পুলিশ প্রহরায় শহর থেকে বিদায় করে দেয়া হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে নবীগঞ্জ- বাহুবল আসনের এমপি এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী পরিস্থিতি শান্ত করতে ফোনে বক্তব্য রেখে পরিস্থিতি স¦াভাবিক করার চেষ্টা করেন। এসময় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা অনুমপ দাশ,সহকারী কমিশনার ভূমি সাহিন দেলোয়ার,ওসি মাসুক আলী,নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ইউপি চেয়াম্যান এমদাদুর রহমান মুকুল, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান সেফু, জেলা পরিষদের সদস্য শেখ সফিকুজ্জামান শিপন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ মিলু, ইউপি চেয়ারম্যান, নির্মেলেন্দু দাশ রানা, নোমান আহমদ সাবেক জেলা পরিষদে সদস্যর আঃ মালিক সাবেক প্যানেল মেয়র এটিএম সালামসহ সাংবাদিক জনপ্রতিনধি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি সংঘর্ষেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে অপ্রাণ প্র্রচেষ্টা করেছেন।